কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবাসহ একই পরিবারের ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর আসামি মোছা. নাজমুন্নাহারকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
বুধবার (০৬ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব
আদালতে এ রায় ঘোষনা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নের ভাটিয়া জহিরকোনা গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর, তার ভাই খুর্শিদ মিয়া ও ভাতিজা সাদেক মিয়া। রায় ঘোষনার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে অনুপিস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণ সুত্রে জানা যায়, আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুরের সাথে জমিজমা নিয়ে একই এলাকার আবুবকর সিদ্দিকসহ কয়েক জনের সাথে বিরোধ ছিলো। এ বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গত ২০১৬ সালের (১০ আগস্ট) আঙ্গুর ও তার ভাই-ভাতিজা মিলে আঙ্গুরের মেয়ে মীরা আক্তার আসমাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার লাশ বাড়ির পেছনে জঙ্গলে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় পরদিন (১১ আগস্ট) আঙ্গুর বাদি হয়ে আবু বক্করসহ ১৬ জনের নামে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তদন্তকালে পুলিশ হত্যার সাথে মীরার বাবা আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুরসহ কয়েকজন স্বজন জড়িত থাকার প্রমান পায়। তাই হত্যা মামলায় আসামিদের জড়িত না থাকায় ২০১৭ সালের (০৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের (০৩ সেপ্টেম্বর) কমিগঞ্জ থানার এসআই অলক কুমার দত্ত বাদি হয়ে নিহত মীরার বাবা আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর, তার ভাই খুর্শিদ মিয়া, ভাতিজা সাদেক মিয়া ও আঙ্গুরের স্ত্রী মোছা. নাজমুন্নাহারকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্যপ্রমান শেষে আজ বুধবার (০৬ আগস্ট) দুপুরে রায় ঘোষনা করেন।
আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।