পাকুন্দিয়া উপজেলার সব সংবাদসহ, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয়, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলার সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন => Pakundiapratidin.news ** আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া সকল সংবাদ আমাদের জানাতে পেইজে মেসেজ দিন অথবা হোয়াটস্অ্যাপে যোগাযোগ করুন- 01683130971 ** যে কোনো বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন- 01401300029 অথবা 01303405500 **

কটিয়াদীতে প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে তারেক রহমান

 


গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এক প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। চার প্রতিবন্ধীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা স্বামীহারা জাহানারাকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন তিনি।


শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা বাজার সংলগ্ন জাহানারার বাড়ি পৌঁছে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জাহানারার হাতে খাদ্য সামগ্রীসহ, আর্থিক সহায়তা তুলেদেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন।



অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী।


এর আগে গত ১১ নভেম্বর “চার প্রতিবন্ধীকে নিয়ে স্বামীহারা জাহানারার জীবনসংগ্রাম শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে।


জালাল উদ্দিন বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমার নজরে আসে। পরে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে এই অসহায় পরিবারটিকে সহায়তা করতে মানবিক কাজটি করতে এসেছি। কিছু আর্থিক সহায়তা ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসছি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কিংবা না গেলেও এই অসহায় পরিবারের পাশে থাকবে। পরবর্তী সময়ে তাদের চিকিৎসার জন্য যা যা করা প্রয়োজন বিএনপি সব করবে। ধন্যবাদ জানাই এমন একটি মানবিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য। এবং জাতির নজরে নিয়ে আসার জন্য।”



জাহানারা বলেন, “আমরা খুবই অসহায়, ধন্যবাদ তারেক জিয়াকে। সংবাদ প্রকাশের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাদের বাড়িতে খাবার এবং টাকা নিয়ে আসছে। সাংবাদিকরা আমাদের অসহায়ের কথা তুলে ধরেছে তাদেরকেও ধন্যবাদ। আমি তারেক জিয়া ও তার পরিবারের সকলের জন্য দোয়া করি, জালাল ভাইয়ের জন্য দোয়া রইল আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা খুবই খুশি।”


উল্লেখ্য, কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা বাজার সংলগ্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিছনে, একটি ঘরে নিঃশব্দে চলে এক নারী যোদ্ধার যুদ্ধ। বয়স তার ৫৫। নাম জাহানারা বেগম। জাহানারার সংসারে চারজন প্রতিবন্ধী সদস্য। প্রত্যেকের কাহিনি আলাদা, কিন্তু কষ্ট একই। প্রথম কন্যা চাঁদনী (২৬) ও দ্বিতীয় কন্যা আঁখি (২২), দুজনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। কখনো হাসে, কখনো কাঁদে, আবার হঠাৎ চুপ হয়ে যায়। মা ছাড়া কেউ তাঁদের সামলাতে পারে না। কখনো ভয়ে, কখনো অজানা রাগে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ফেলে। মা জাহানারা তখন তাদের বুকে টেনে শান্ত করেন, ঠিক যেমন ছোট্ট শিশুকে দোলানো হয়।




বোন মিনা আক্তার (৪৩) শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে হাঁটুর ভেতরে টিউমার ধরা পড়েছে, যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ব্যথায় কাতর মিনা বলেন, অপারেশন করানো দরকার, কিন্তু টাকাই নাই। পায়ে দাঁড়াতে পারলে আমি কাজ করতাম, আপার (জাহানারার) কষ্ট একটু কমত।


অন্যদিকে ভাগ্নে মনির হোসেন (৩৯) পুরোপুরি দৃষ্টি হারিয়েছেন। জন্ম থেকেই আংশিক অন্ধত্ব ছিল, এখন আর কিছুই দেখতে পান না। চিকিৎসকরা বলেছেন, কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করলে হয়তো চোখে আলো ফিরতে পারে। কিন্তু সেই চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য কোথায়? মনির শান্ত কণ্ঠে বললেন, আমি আলো দেখি না, কিন্তু জানি আমার খালা আমাদের জন্য দিনরাত লড়ে যায়। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখে।


এই চারজনের যত্ন নিতে নিতে জাহানারা নিজেই আজ এক অসুস্থ নারী। ফুসফুস ও হৃদরোগ তাকে প্রায় অচল করে দিয়েছে। অনেক সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কিন্তু ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। মেয়েদের খাওয়া, বোনের ওষুধ, ভাগ্নের যত্ন সব কিছুই তাকেই সামলাতে হয়। কখনো প্রতিবেশীরা একটু ভাত দেন, কখনো পুরোনো কাপড়। মাসে একবার কেউ যদি কিছু সহায়তা করে, তাতেই কৃতজ্ঞ হয়ে যান তিনি। কিন্তু সব দিন সমান যায় না। অনেক দিন পুরো পরিবার না খেয়েই রাত কাটায়। তখন জাহানারা বেগম কেবল দোয়া করেন, “আল্লাহ, আমারে না হয় ক্ষুধায় রাখো, কিন্তু এইগুলারে যেন ক্ষুধায় না রাখো। এ পরিবারটির প্রয়োজন শুধু সাহায্য নয়, একটু মানবতা, একটু সহানুভূতি।



মিনা আক্তারের জন্য একটি হুইলচেয়ার, অপারেশনের ব্যবস্থা, মনির হোসেনের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন, দুই কন্যার মানসিক চিকিৎসা, এগুলিই তাঁদের জীবনের বড় স্বপ্ন।


উপহার বিতরণে তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক জাকির হোসেন অনিক, আচমিতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম রুবেলসহ স্থানীয় নেতারা।


ছবি ও তথ্য- ভিওডি

Post a Comment

Previous Post Next Post