গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামের অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় মারাত্মকভাবে আহত হন নুরুল হুদা। কয়েক দিন জীবন-মৃত্যুর লড়াই শেষে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃত্যুর খবর পৌঁছাতেই গফরগাঁওয়ের সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল গ্রামে শুরু হয় কান্নার রোল। স্বজন-প্রতিবেশীরা বিশ্বাস করতে পারছেন না। যে মানুষটি সবার নিরাপত্তার জন্য দিনরাত কাজ করেছেন, তিনি আর ফিরবেন না।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দেন নুরুল হুদা। অগ্নিনির্বাপণের এই পেশাকে তিনি শুধু চাকরি নয়, নিজের জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি মা-বাবা, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
বাবা আবুল মুনসুর একজন ব্যবসায়ী, স্ত্রী আসমা খাতুন গৃহিণী। মেয়ে নুসরাত নেহা (১০) গফরগাঁও ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ছোট ছেলে আহসান আবিদ (৪) এখনো বুঝে উঠতে পারেনি কেন বাবা আর বাড়ি ফিরছেন না।
নুরুল হুদার মামা, গফরগাঁও মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও গণমাধ্যমকর্মী সাব্বির কামাল অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, ‘দেশমাতৃকার সোনার ছেলে নুরুল হুদা অন্যের জান-মাল রক্ষায় নিজের জীবন বিলিয়ে দিল। জাতীয় বীর নুরুল হুদার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সালাম চিরকাল থাকবে।’
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর আগে দুই হাত তুলে নুরুল হুদা তাকে বলেছিলেন, ‘মামা, ফি-আমানিল্লাহ। আমার জন্য দোয়া করো। আমার মা, বাবা আর স্ত্রী-সন্তানদের দেখে রেখো…।’
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গফরগাঁওয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে এই বীর শহীদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন অন্যের প্রাণ রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করা এই সত্যিকারের নায়ক।
-সময় টিভি