পাকুন্দিয়া উপজেলার সব সংবাদসহ, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয়, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলার সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন => Pakundiapratidin.news ** আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া সকল সংবাদ আমাদের জানাতে পেইজে মেসেজ দিন অথবা হোয়াটস্অ্যাপে যোগাযোগ করুন- 01683130971 ** যে কোনো বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন- 01401300029 অথবা 01303405500 **

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত





কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় প্রতিবারের মতো এবারও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) অনুষ্ঠিত জামাতে যোগ দিতে সকাল থেকেই মুসল্লিরা ছুটে চলেন জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের উদ্দেশ্যে।


 


 


সাত একর আয়তনের ঐতিহ্যবাহী এ ঈদগাহে এবার ছিল ঈদুল আযহার ১৯৮তম জামাত। কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা এবং ব্যস্ততা সত্ত্বেও দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মুসল্লি জামাতে অংশ নেন।


 


 


সকাল ৯টায় শুরু হওয়া জামাতে ইমামতি করেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গ্র্যান্ড ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। এছাড়া বিকল্প ইমাম হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসার তাফসির বিভাগের প্রভাষক যোবায়ের ইবনে আব্দুল হাই জামাত শুরু হওয়ার আগে বয়ান রাখেন।


 


 


দূর দূরান্ত থেকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করে। একটি ট্রেন ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় ছেড়ে আসে এবং সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছায়। অন্যটি ময়মনসিংহ থেকে সকাল পৌনে ৬টায় ছেড়ে আসে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছায়।


 


 


জামাতকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তা ও নজরদারিতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ শেষ হয়। মাঠের চারপাশে বসানো হয় নিরাপত্তা চৌকি।


 


 


গ্র্যান্ড ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ নামাজ শেষে দেশ ও জাতির উন্নতি, সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর সংহতি ও ঐক্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন। এছাড়া দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের হেফাজতের জন্য মহান আল্লাহ্‌র দরবারে প্রার্থনা জানান ইমাম।


 


 


এসময় মুসল্লিদের উত্তোলিত হাত আর আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার আমিন, আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকা।


 


 


এ ঈদ জামাত উপলক্ষ্যে স্থানে স্থানে নির্মিত হয় তোরণ, রাস্তার দু’পাশে টানানো হয় নানা রঙের পতাকা ও ব্যানার। জামাতের আগে পরে শহর হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।


 


 


শোলাকিয়ার ঐতিহ্যবাহী জামাতে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিগণ ছুটে আসেন। কোরবানির ব্যস্ততার কারণে মুসল্লির সংখ্যা কম হলেও এবারের ঈদুল আযহার জামাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।


 


 


এখানে উল্লেখ্য যে, ১৮২৮ সালে প্রথম বড় জামাতে এই মাঠে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়ালাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। এই সোয়ালাখ থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা কালের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় উচ্চারণ বিবর্তনে হয়েছে আজকের শোলাকিয়া।


 


 


ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহা. কাজেম উদ্দীন বলেন, “শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকার ফুটেজগুলো আমরা সংগ্রহ করেছি। এছাড়া প্রত্যেকটি গেটে আর্চওয়ে ছিল। এর মধ্যে দিয়ে এ নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছে মুসল্লিদের।


 


 


এ ছাড়া প্রত্যেককে সার্চ করার জন্য মেটাল ডিটেক্টর ছিল। মুসল্লিদের প্রবেশ পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা ফোর্স দিয়ে চেকপোস্ট ডিউটি করেছে। আশপাশে যেসব স্থাপনা রয়েছে, প্রত্যেকটা স্থাপনাতে পুলিশ ডিউটিতে আছে। মাঠের মুসুল্লিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এখন মুসল্লিদের সুস্থভাবে বাড়ি ফেরার আশায় আছি।”


 


 


 


জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, “দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। তাদের জন্য সুপেয় পানি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে অজুর পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের কোনো শারীরিক সমস্যা হলে এখানে মেডিকেল ক্যাম্প রয়েছে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখানে কাজ করেছে। ওয়াচ টাওয়ার ও মাঠের আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।”

Post a Comment

Previous Post Next Post